জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জানিয়েছেন, দু-এক দিনের
মধ্যেই তিনি মহাজোট ছাড়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। এরশাদ বলেন, আমরা
নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। অচিরেই নতুন জোটের ঘোষণা আসবে। গতকাল
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জাতীয় ছাত্রসমাজের
যোগদান অনুষ্ঠানে এরশাদ এ কথা বলেন। বুধবার রাতে বিকল্প ধারার সভাপতি ও
সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি
কাদের সিদ্দিকী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের( জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর
রবের সঙ্গে বৈঠক হয় জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের। একই অনুষ্ঠানে জাতীয়
পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বুধবার সাবেক
রাষ্ট্রপতি বি. চৌধুরীর বাসায় বৈঠকে এই চার দলের নেতৃত্বে তৃতীয়
রাজনৈতিক জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। আমরা খুব শিগগিরই এই জোটের আত্মপ্রকাশ
ঘোষণা করবো। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮
দলীয় জোটের বাইরে নতুন এই জোটে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামও
থাকবে বলে জানান জাতীয় পাটির্র এই নেতা। এর বাইরে জামায়াতে ইসলামী বিরোধী
ইসলামী দলগুলোও তৃতীয় এই জোটে যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এরশাদ
জানান, ১৪ দল ও ১৮-দলীয় জোটের বাইরে অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। এতে
ড. কামাল হোসেনও যোগ দেবেন। বিভিন্ন ইসলামি দলেরও যোগ দেওয়ার কথা। এ
দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে দেশকে রাহুর গ্রাস থেকে তিনি মুক্ত করবেন।
এরশাদ বলেন, একদল তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, অন্যদল বলে তত্ত্বাবধায়ক দেব
না। তাদের ক্ষমতায় যাওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য। তারা কেউ জনগণের কথা ভাবে না।
এখন সুযোগ এসেছে, এই সুযোগকে আমরা কাজে লাগাব। জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের
ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিবেচিত হবে না। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া
নির্বাচনে যাব না। অশুভ চক্র ভেঙে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে জয়লাভ করবে। দুই
জোটের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ১৮-দলীয় জোটে কত দল আছে, তারা নিজেরাই
জানে না। ১৪ দলে কতগুলো দল আছে, তা তারাও জানে না। এবার আমরা জোট করব এবং
এই জোট জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে। এরশাদ দাবি করেন, 'তাঁর শাসনামলে দেলোয়ার
হোসেন নামের একজন গাড়িচাপায় নিহত হয়েছিলেন। নূর হোসেন পেছন থেকে
গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পুলিশ গুলি করলে তো সামনে থেকে গুলি করত। তিনি বলেন,
'আমি দেলোয়ার হোসেনের বাসায় গিয়েছিলাম। নূর হোসেনের বাবাকে প্রতি মাসে
টাকা দিতাম। এখন কত লোকের প্রাণহানি ঘটছে, কত মানুষ আগুনে পুড়ে মারা
যাচ্ছে, কোনো নেতা- নেত্রীকে দেখেছেন তাঁদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে?'এরশাদ
বলেন, দেশ আজ দুই জোটের অভিশাপ থেকে মুক্তি চায়। আল্লাহ সেই সুযোগ
সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই সুযোগ কাজে লাগোতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার,
প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমেদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ
রশীদ প্রমুখ
- Blogger Comment
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন