সাতক্ষীরার
তালায় ঈদ ও পূজার আনন্দ ফিকে হয়ে গেছে পানিবন্দি হাজার হাজার পরিবারের।
পেটে ভাত নেই, কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, নির্ঘুম রাত কাটে অসংখ্য মানুষের।
এমন চিত্র বন্যা দুর্গত উপজেলার ৮০টি গ্রামের প্রায় ১৭ হাজার পরিবারের।
উপজেলা পরিষদ চত্বর, সেটেলমেন্ট অফিস, সমাজসেবা অফিসসহ বেশ কয়েকটি অফিস
পানিতে একাকার হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। সংকট দেখা
দিয়েছে সুপেয় পানির। ছড়িয়ে পড়েছে পানিবাহিত রোগ। রাস্তার ওপর কয়েক স্থানে
পানি উঠে যাওয়ায় খুলনা-পাইকগাছা সড়কে পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যে কোন
সময় বন্ধ হয়ে যাবে সরাসরি বাস চলাচল।কপোতাক্ষের উপচেপড়া পানি আর
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকা তলিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কৃত্রিম
বন্যার। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বসতবাড়ির লোকজন, ভেসে গেছে চিংড়ি ঘের,
ফসলের ক্ষেত, পানের বরজ ও নার্সারী। তলিয়ে গেছে কয়েক গ্রামের বসত ঘর,
রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক
ডঃ মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার তালার বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত গ্রাম
পরিদর্শন করেছেন।সূত্র জানায়, কপোতাক্ষের নাব্যতা হরাসে গত কয়েক
বছর যাবত্ উপকূলীয় এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে কৃত্রিম বন্যার।
এতে প্রতি বছর সেখানকার হাজার হাজার পরিবার বসতবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে
রাস্তার ধার, ওয়াপদার বাঁধসহ সরকারি সম্পত্তিতে খুপড়ি ঘর বেঁধে কোন রকম
দিনাতিপাত করছে। সমস্যা সমাধানে সরকার কপোতাক্ষ খননের নামে এস্কেভেটর দিয়ে
কিছু খনন কাজ করলেও তা জলাবদ্ধতা নিরসনে তেমন কোন ভূমিকা রাখেনি। গত
বছরের বন্যার ঘা এখনও দগদগে, এরই মধ্যে নতুন করে বন্যা কবলিত হাজার হাজার
মানুষের রাত কাটছে নির্ঘুম। গোপালপুর গ্রামের সুমন রায় বলেন, গত
কয়েকদিনের মুষলধারায় বৃষ্টির পানি খালের মাধ্যমে কপোতাক্ষে পড়তে না পেরে
তাদের ঘরের বারান্দা পর্যন্ত উঠেছে। টিউবওয়েল ও শৌচাগার তলিয়ে যাওয়ায়
স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমতাবস্থায় দুর্গাপূজার আনন্দ মাটি হয়ে
গেছে। কৃষ্ণকাটি এলাকার শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, দু'বার কপোতাক্ষের বাঁধ
ভেঙেছে। মাটির অভাবে এখনো বাঁধ মেরামত করা যায়নি। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট।
উঁচু জায়গা না থাকায় লাশ দাফন করতে হচ্ছে দূরবর্তী কোন গ্রামে। নিরুপায়
হয়ে তারা উঁচু রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। কিভাবে কোরবানির ঈদে অংশ নেবেন
তা তারা ভেবে পাচ্ছেন না। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুর
রহমান জলাবদ্ধ এলাকার পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে বলেন,
জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে এ পর্যন্ত ৬৪ মে.টন জিআর-এর চাউল পাওয়া গেছে।
বিতরণের কাজ চলছে।
- Blogger Comment
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন
(
Atom
)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন