টেন্ডুলকারের না জানা কিছু তথ্য

খেলোয়াড়ি জীবনেই রাজ্য সভার সদস্য মনোনীত হওয়া ভারতের প্রথম ক্রিকেটার শচিন টেন্ডুলকার।স্কুল জীবনে এক ম্যাচে বন্ধু বিনোদ কাম্বলির সাথে জুটি বেঁধে টানা দুইদিন ব্যাট করেন টেন্ডুলকার। সেই জুটিতে সংগ্রহ করা ৭৫২ রান উইসডেন বুক অব ক্রিকেট রেকর্ডে সর্বোচ্চ রানের জুটি হিসেবে জায়গা করে নেয়। ফাস্ট বোলার হতে চেয়েছিলেন টেন্ডুলকার। কিন্তু তরুণ বয়সে ১৯৮৭ এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে তার ইচ্ছাকে প্রত্যাখ্যান করেন ডেনিস লিলি। ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারত-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচে একজন বল বয় ছিলেন টেন্ডুলকার। সে সময় তার বয়স ছিল ১৪ বছর। ১৯৮৮ সালে ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে ভারতের বিরুদ্ধে একটি এক দিনের অনুশীলন ম্যাচে বদলি হিসাবে পাকিস্তানের হয়ে ফিল্ডিং করেছিলেন টেন্ডুলকার। খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুতে নেট অনুশীলনে আউট না হয়ে পুরো সেশন ব্যাট করতে পারলে তার তত্কালীন কোচ রমাকান্ত আচরেকারের কাছ থেকে টেন্ডুলকার একটি করে কয়েন পেতেন। এমন ১৩টি কয়েন পেয়েছিলেন টেন্ডুলকার।
ওয়ার্ল্ড টেলের সঙ্গে ৩১.৫ কোটি রুপিতে পাঁচ বছরের চুক্তি করে ১৯৯৫ সালের অক্টোবরে সবচেয়ে ধনী ক্রিকেটার হন টেন্ডুলকার।নিজের কিশোর বয়সে ক্রিকেট ব্যাগ মাথার নিচে দিয়ে ঘুমাতেন টেন্ডুলকার।পারফিউম এবং ঘড়ি সংগ্রহ করতে পছন্দ করেন টেন্ডুলকার।টেন্ডুলকারের প্রথম ব্যক্তিগত গাড়ি ছিল ৮০০ সিসির মারুতি।থার্ড আম্পয়ারের সিদ্ধান্তে আউট হওয়া প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার টেন্ডুলকার। ১৯৯২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ডারবান টেস্টের দ্বিতীয় দিনে থার্ড আম্পয়ারের সিদ্ধান্তে আউট হন তিনি।ভারতের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেট খেলেন টেন্ডুলকার। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর।
নিজের অভিষেক টেষ্টে ইংলিশ ফাস্ট বোলার এ্যালান মুলালি অভিযোগ করেন- স্বাভাবিকের চেয়ে চওড়া ব্যাট দিয়ে খেলছেন টেন্ডুলকার।রনজি, দুলিপ এবং ইরানি ট্রফিতে সেঞ্চুরির মাধ্যমে অভিষেক ঘটে টেন্ডুলকারের।তত্কালীন অধিনায়ক রবি শাস্ত্রীর সময়ে রনজি অভিষেকে ফিল্ডিংয়ের সময় অধিনায়কত্ব করেন শচিন।শচিন টেন্ডুলকার সব সময় ভারি (৩,২ পাউন্ড) ব্যাট ব্যবহার করেন। তার চেয়ে বেশি ভারি ব্যাট ব্যবহার করতেন একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনার।অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের টেন্ডুলকার স্কুল জীবনে বেশ হৈ-চৈ করতেন।ছদ্মবেশ ধারণ করে ১৯৯৫ সালে 'রোজা' সিনেমা দেখতে হলে যান টেন্ডুলকার। তবে কিছুক্ষণ পর চোখের সানগ্ল¬াস খোলার পর হলের সবাই ঠিকই তাকে চিনে ফেলে।ভারত সরকারের কাছ থেকে রাজীব গান্ধী খেল রত্ন, অর্জুনা এ্যাওয়ার্ড এবং পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন টেন্ডুলকার। এ সকল পুরস্কার পাওয়া তিনিই একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার।স্কুলজীবনে গ্রীষ্মকালীন বন্ধের সময় এক রবিবার সন্ধ্যায় গাছ থেকে পড়ে যান টেন্ডুলকার। এরপর শাস্তিস্বরূপ বড় ভাই ও মেটর অজিত তাকে ক্রিকেট কোচিং ক্লাশে পাঠিয়েছিলেন।সুযোগ পেলেই মত্স্য শিকার করেন টেন্ডুলকার।মহারাষ্ট্রের 'বড় পাও' নামক স্ন্যাকসের প্রতি দুর্বল টেন্ডুলকার।ঐতিহাসিক ৫০তম টেস্ট সেঞ্চুরি করার সময় নিজের প্রিয় ব্যাটটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি।পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে সুনীল গাভাস্কারের দেয়া প্যাড ব্যবহার করেছিলেন টেন্ডুলকার। সাবেক টেনিস তারকা জন ম্যাকেনরোর অসম্ভব ভক্ত ছিলেন টেন্ডুলকার। ম্যানেরোকে আদর্শ হিসাবে বিবেচনা করে টেন্ডুলকার তার মত (ম্যাকেনরো) চুল কাটাতেন এবং হাতে একটা ব্যান্ড পরতেন।এক বর্ষপঞ্জিতে টেন্ডুলকারের সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি, ৯টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি, ১৯৯৮ সালে। ১৯৯৮ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার মোট রান ১৮৯৪। ক্রিকেট বর্ষপঞ্জিতে ওয়ানডে ক্রিকেটে যে কোন ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বাধিক রান।টেনিস তারকা পিট সামপ্রাস ও বরিস বেকার এবং আর্জেন্টিনার দিয়েগো ম্যারাডোনার মত অন্য অনেক ক্রীড়াবিদের রোল মডেল টেন্ডুলকার নিজেই। প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী শচিন দেব বর্মনের নামানুসারে শচিন টেন্ডুলকারের নাম রাখা হয়। শচীনের পিতা রমেশ টেন্ডুলকার ছিলেন শচিন দেব বর্মনের একনিষ্ঠ ভক্ত। সৌরভ গাঙ্গুলিকে 'বাবু মশাই' বলে ডাকতেন শচিন। গাঙ্গুলি 'ছোটা বাবু' বলে ডাকতেন টেন্ডুলকারকে।শচিনকে দেখাশুনা করা মহিলা চিরদিন তাকে 'শচুচি বাই' বলে ডাকতেন।নিজের ফেরারি গাড়ি ব্যবহারে শচিন এতটাই দুর্বল যে, স্ত্রী অঞ্জুলি তাকে কখনো এটা চালাতে দেন না। টেনিস বলেও ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করেন টেন্ডুলকার। ১৯৯৬ বিশ্বকাপের আগ পর্যন্ত কোন ব্যাট কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি ছিল না টেন্ডুলকারের। এ টুর্নামেন্টের পর বিখ্যাত একটি ব্যাট প্রস্তুতকারী কোম্পানি তার ব্যাট স্পন্সর করে।১৯৯২ সালে সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসাবে টেস্টে এক হাজার রান পূর্ণ করেন শচিন।
 টেস্ট ক্রিকেটে ১১ হাজারের বেশি রান এবং ৪০ উইকেট শিকার করা একমাত্র ক্রিকেটার টেন্ডুলকার।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment