
গত
বছর কোরবানির ঈদের সময় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫
টাকা। সেই পেঁয়াজের কেজি এখন বাজার ও মানভেদে ১০০ থেকে ১১০ টাকা! আর
আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা।রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গত
সপ্তাহের শুরুতে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার
ছিল মানভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। এক দিন পর গতকাল শুক্রবার ওই পেঁয়াজের দাম
কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। কোরবানির ঈদে পেঁয়াজের চাহিদা বৃদ্ধির সময়ে
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরাও দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।মাস দুয়েক আগে
পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে। ১৫ দিন আগে দাম কমতে থাকায় স্বস্তি ফিরছিল
ক্রেতাদের। কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে অনেক ঝাঁজ বাড়ল।কোরবানির ঈদের
আগে পেঁয়াজের দাম নাগালে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে বাংলাদেশ
ব্যাংক পেঁয়াজ আমদানিতে সুদহার ১২ শতাংশ বেঁধে দেওয়া এবং ঋণপত্রের
মার্জিন কমানোসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নিলেও কাজ হয়নি। উল্টো ঈদের ঠিক আগে দাম
বাড়ায় দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে সাধারণ মানুষের।রাজধানীতে পেঁয়াজের
সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বৃহস্পতিবার
দিনের বেলা প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৮ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু
সন্ধ্যায় ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি শুরু হয়। এর প্রভাব পড়ে গতকাল
কাঁচাবাজারের খুচরা দোকানে।শ্যামবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, শ্যামবাজারে দেশি
পেঁয়াজের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের
পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। কয়েকজন আমদানিকারক অবশ্য বলেছেন, ভারতে সাত দিনের
ধর্মঘট থাকায় পেঁয়াজ আমদানি ব্যাহত হয়েছে। এতে বাজারে কিছুটা ঘাটতি দেখা
দেওয়ায় দাম বেড়েছে। ঈদের পর আমদানি স্বাভাবিক হলে বাজার স্বাভাবিক হয়ে
যাবে।
কয়েক মাস ধরে একই
দামে বিক্রি হওয়া গরম মসলার দামও বেড়েছে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে।
পাইকারি মসলার বাজার মৌলভীবাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে লবঙ্গের দাম। এক
সপ্তাহে কেজিতে ৪০০ টাকা বেড়ে লবঙ্গ এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ থেকে
দেড় হাজার টাকায়। ভালো মানের প্রতি কেজি এলাচি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০
টাকায়। এর দাম ছিল এক হাজার ৪০০ টাকা। সাধারণ এলাচি ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে
বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকায়।ভারতীয় জিরা প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা
ও ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সিরিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক ও
আফগানিস্তানের জিরার দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি। সরবরাহ ভালো থাকলেও প্রতি
কেজি ধনিয়ার দাম ৫৫-৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়।অবশ্য বেশি সরবরাহ থাকায় দারুচিনির দাম গত সপ্তাহের
২১০-২৭০ টাকা থেকে কমে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকায়। জয়ত্রী এক হাজার
৫৫০ টাকা, জায়ফল ৬৩০, মিষ্টি জিরা ১০৭, তেজপাতা ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি
বিক্রি হচ্ছে।ব্যবসায়ীরা বলছেন, মসলা আমদানিতে চড়া শুল্কের কারণে ব্যয় বেশি পড়ে। তাই বিক্রিও করতে হয় বেশি দামে।
পূজায় বাড়তি
চাহিদা থাকায় ইলিশের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এক কেজি ওজনের প্রতিটি
ইলিশ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয় ৭০০ থেকে ৭৫০
টাকায়। মাঝারি ইলিশ (৮০০ গ্রাম) প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫৫০
টাকায়।ব্যবসায়ীরা জানান, আগামীকাল রোববার থেকে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ
করা হয়েছে। সে কারণে ইলিশের সরবরাহ বন্ধ থাকবে। ফলে অনেক ইলিশই হিমাগারে
চলে গেছে। এতে দাম বেড়েছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন