শেষ
মুহূর্তে বিরোধী জোটকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি
দেওয়ায় বিএনপি তা মেনে নিলেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুমতি পাওয়ার পর বিএনপি বলছিল, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে নতুন করে কিছুটা উত্তাপ ছড়ায়। এরপর রাত সোয়া ১০টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ ব্রিফিং করে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাঁরা সমাবেশ করবেন।এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় রাজধানীর কাঁচপুর ব্রিজসংলগ্ন এলাকা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম, পঞ্চগড়ের বোদা, জয়পুরহাট, কিশোরগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, নাটোরের বনগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি জেলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের ৯৬ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ অবস্থায় দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অবশ্য ঢাকার পরে চট্টগ্রামেও সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আওয়ামী লীগকে শহীদ মিনারে ও বিএনপিকে কাজীর দেউড়িতে সমাবেশ করতে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সূত্র জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ ১০ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য রাজধানীতে মোতায়েন থাকবেন। তাঁদের হাতে থাকছে দাঙ্গা দমনের সব ধরনের সরঞ্জাম।গতকাল বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ১৩টি শর্তে বিরোধী জোটকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। শর্তের মধ্যে আছে, বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে থেকে লোকসমাগম করা যাবে না। সমাবেশে দা-কুড়াল-বল্লম, রড, ব্যানার-ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি ব্যবহার করা যাবে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুমতি পাওয়ার পর বিএনপি বলছিল, তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নয়, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করবে। এ নিয়ে নতুন করে কিছুটা উত্তাপ ছড়ায়। এরপর রাত সোয়া ১০টায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ ব্রিফিং করে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তাঁরা সমাবেশ করবেন।এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় রাজধানীর কাঁচপুর ব্রিজসংলগ্ন এলাকা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম, পঞ্চগড়ের বোদা, জয়পুরহাট, কিশোরগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, নাটোরের বনগ্রামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের কয়েকটি জেলা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের ৯৬ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এ অবস্থায় দেশজুড়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। অবশ্য ঢাকার পরে চট্টগ্রামেও সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আওয়ামী লীগকে শহীদ মিনারে ও বিএনপিকে কাজীর দেউড়িতে সমাবেশ করতে অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের সূত্র জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আজ ১০ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য রাজধানীতে মোতায়েন থাকবেন। তাঁদের হাতে থাকছে দাঙ্গা দমনের সব ধরনের সরঞ্জাম।গতকাল বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ১৩টি শর্তে বিরোধী জোটকে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। শর্তের মধ্যে আছে, বিকেল পাঁচটার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে। সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে থেকে লোকসমাগম করা যাবে না। সমাবেশে দা-কুড়াল-বল্লম, রড, ব্যানার-ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি ব্যবহার করা যাবে না।
বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, পল্টন ময়দান অথবা
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক—এই তিনটি স্থানের যেকোনো একটিতে
সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে ঈদের আগে ডিএমপির কাছে আবেদন করে। গতকাল অনুমতি
পাওয়ার পর বিএনপির প্রতিনিধিদল নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে পুলিশ
কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে আবেদনপত্র জমা দেয়। এ কারণ হিসেবে বিএনপির
যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্লা বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনের নিরাপত্তার বিষয়টি
মাথায় রেখে তাঁরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইছেন।সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাঁরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করবেন। এ জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে না চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে বিএনপির একজন সাংসদ ও কেন্দ্রীয় নেতা প্রথম আলোকে
বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চায়। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে
তাঁরা নিরাপদ বোধ করছেন না। কারণ, তাঁদের কাছে খবর আছে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের জড়ো
করা হয়েছে।অবশ্য ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘তাদের
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই সমাবেশ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমরা কোনো
সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি আশা করছি না।’এদিকে সারা দেশে ১৮-দলীয় জোটের কর্মসূচির কারণে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ-র্যাব। নামানো হয়েছে
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি
বসানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানো
হয়েছে।বিভিন্ন স্থানে
পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকা, ঢাকায় সমাবেশের স্থান নিয়ে বিএনপির অবস্থান,
সমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ‘দা-কুড়াল-বল্লম’ নিয়ে আসার নির্দেশসহ
নানা কারণে সারা দেশের মানুষের মধ্যে আজকের দিনটি ঘিরে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তা ছাড়া ঢাকায় সমাবেশ থেকে খালেদা জিয়া কী ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন,
তা নিয়েও উৎকণ্ঠা আছে।
বিশেষ করে, নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের
পরীক্ষার কারণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা এখন সবচেয়ে বেশি।
ব্যবসায়ীরাও আতঙ্ক বোধ করছেন। আতঙ্কের কারণে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীতে
গাড়ির চলাচল ছিল কম। বিকেলে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার খবরে আতঙ্ক কমে আসে
এবং যান চলাচল বাড়তে থাকে।
: গতকাল
সন্ধ্যায় সমাবেশের অনুমতি পাওয়ায় ব্যাপক লোকসমাগম নিয়ে চিন্তিত হয়ে
পড়ে বিএনপি। ঢাকার সমাবেশে সারা দেশ থেকে লোকসমাগমের পরিকল্পনা করা হয়।
তবে বিএনপি বলেছে, আজকের সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগম হবে।বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, সমাবেশ হলেও বিভিন্ন স্থানে
বিএনপির নেতা-কর্মীরা থাকবেন। সমাবেশে হামলা বা বাধা দেওয়া হলে সারা দেশে
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন তাঁরা। ঢাকায়ও বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করবেন
তাঁরা। তবে প্রকাশ্যে নয়। প্রয়োজন হলে নেতা-কর্মীরা যেন বাইরে বেরিয়ে
আসতে পারেন, তেমন প্রস্তুতি থাকবে। ওই নেতা বলেন, অনুমতি দেওয়ায় তাঁরা আর
নাশকতা চান না। জুমার নামাজের পর নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসবেন।সমাবেশের অনুমতি পাবে না—এমনটা ধরেই বিএনপি ও জামায়াত
ঢাকায় নাশকতা সৃষ্টির ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি
দেওয়ায় এখন তারা কী করবে, সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছ থেকে কোনো
দিকনির্দেশনা পায়নি।১৮-দলীয়
জোটের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা
হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, গাইবান্ধা, সাতক্ষীরা,
নারায়ণগঞ্জ ও বগুড়ায় বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে
খুলনায় বিজিবি নামানো হবে। গতকাল সন্ধ্যার পর ঢাকায় বিজিবি নেমেছে।
বিজিবির উপমহাপরিচালক কর্নেল হাফিজ আহসান ফরিদ প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসন যেখানে অনুরোধ করবে, সেখানেই বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হবে।ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার ও মহানগর
পুলিশ কমিশনারের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম গতকাল সকালে বলেন, রাজধানীর কমপক্ষে
৫০টি জায়গায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটতে পারে, এমন তথ্য রয়েছে তাঁদের
হাতে। এ জায়গাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের পুলিশ
কর্মকর্তারা ভোর থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। গত বুধবার থেকে মিরপুর,
আগারগাঁও, বিজয়নগর, প্রেসক্লাব, ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি
চালানো হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও বাড়ানো হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় দাঙ্গা দমনের গাড়ি (রায়ট কার) মোতায়েন করা
হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন