রাজনৈতিক কারণে আত্মগোপনকারীরা এ চুক্তির বাইরে থাকবেন




ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিনিময়ের সুযোগ রেখে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রস্তাবিত বহিঃসমর্পণ চুক্তি (বন্দিবিনিময় চুক্তি) অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ভারতের মন্ত্রিসভা আগেই এ চুক্তিতে অনুসমর্থন দিয়েছে। এখন এর অনুলিপি হস্তান্তর হলেই চুক্তি কার্যকর হবে। এ চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশ অনুমতিক্রমে এক দেশ থেকে অন্য দেশে বন্দিবিনিময় করতে পারবে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কোনো খুনি যদি ভারতে লুকিয়ে থাকে, তাহলে ওই অপরাধীকে ফিরিয়ে আনার জন্য এটি হবে একটি বড় উদ্যোগ। তবে যদি কোনো অপরাধী রাজনৈতিক কারণে লুকিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে এক দেশ আরেক দেশকে বন্দি নাও দিতে পারে। প্রস্তাবে এ রকম একটি বিধানও রাখা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও সুশীল কুমার সিন্দে গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকায় এই 'বহিঃসমর্পণ চুক্তিতে' স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তির ফলে আসামের বিদ্রোহী সংগঠন উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে ফিরিয়ে দেয়ার পথ তৈরি হলো। এক যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি অনুপ চেটিয়া সম্প্রতি এর আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও মত বদলে সম্প্রতি ভারতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরেই তাকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অনুপ চেটিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশও সুব্রত বাইন ও সাজ্জাদ হোসেনের মতো পলাতক সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে আনার সুযোগ পাবে।মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের শুরুতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগের ২০১২-১৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এছাড়া মন্ত্রিসভায় সন্ত্রাস দমন ও মাদক নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুটি চুক্তি করার প্রস্তাবও অনুমোদন দিয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'বাংলাদেশ-ইউনাইটেড স্টেটস কাউন্টার টেরোরিজম কোঅপারেশন ইনিশিয়েটিভ' চুক্তি হলে সন্ত্রাস দমনে দুই দেশের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি বিনিময়ের পথ তৈরি হবে। এছাড়া জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধেও দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। আর 'মেমোরেন্ডাম অব কো-অপারেশন বিটুইন মিনিস্ট্রি অব হোম অ্যাফেয়ার্স অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ইউনাইটেড স্টেটস ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফর মিউচ্যুয়াল কো-অপারেশন ইন দ্য স্ফিয়ার অব ড্রাগ কন্ট্রোল' চুক্তি হলে মাদক নিয়ন্ত্রণে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ তৈরি হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। এতে কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment