মানব জাতির জন্য সর্ব শেষ আসমানী কিতাব হল কুরআন



ইসলামের বিভিন্ন বর্ননা অনুযায়ী স্রষ্টা অথবা আল্লাহ ইসলামের নবী ইব্রাহীমকে স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কুরবানী করার নির্দেশ দেন । এই আদেশ অনুযায়ী ইব্রাহিম তার সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করার জন্য তিনি যখন প্রস্তুত হলেন স্রষ্টা তখন তাকে তা করতে বাধা দেন এবং পুত্রের পরিবর্তে পশু কুরবানীর নির্দেশ দেন । এই ঘটনাকেই স্মরণ করে সারা বিশ্বে আমরা মুসলিম ধর্মালম্বীরা প্রতি বছর এই দিবসটি বা ঈদুল আযাহ পালন করে থাকি । হিজরি বর্ষপঞ্জি হিসাবে জিলহজ্জ্ব মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হয় শেষ হয় ১২ তারিখ । ৩ দিন ধরে ঈদুল আজহা চলে । হিজরী চান্দ্র বছরের গণনা অনুযায়ী ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহার মাঝে ২ মাস ১০ দিন ব্যবধান হয়ে থাকে । আব্রাহাম বা অব্রাহাম এই শব্দে ইসলামের নবী ইব্রাহীমের নামকে বলা হয়েছে । বাইবেলে বর্নিত তিনি হলেন তিন গোষ্ঠীপতির প্রথম বংশধর । তার গল্প বাইবেলের আদিপুস্তক 11:26 থেকে আদিপুস্তক 25:18 এর মধ্যে বলা আছে তিনি ইহুদি খ্রিস্টান এবং ইসলামের বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছেন ।


বাইবেল হল খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ । বাইবেল বিবলজ শব্দটি উদ্ভুত হয়েছে বা পাওয়া যায় গ্রীক বিবলিয়া শব্দ থেকে যার অর্থ হল একটি পুস্তক । এটি প্যাপিরাস গাছের ছাল । বাইবেল হচ্ছে শাস্ত্র লিপি বা পুস্তক যাতে ঈশ্বরের বাক্য লেখা । বাইবেল হলো ৬৬টি পুস্তকের একটি সংকলন যা দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত আছে । ৩৯টি পুস্তক সম্বলিত পুরাতন নিয়ম বা ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং ২৭টি পুস্তক সম্বলিত নতুন নিয়ম বা নিউ টেস্টামেন্ট । খ্রিস্টধর্মমতে ১৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৪০জন লেখক বাইবেল রচনা করেছিলেন । এরা ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন লোক । বাইবেলের মুখ্য বিষয়বস্তু বা কেন্দ্রমণি হলেন যীশু । পুরাতন নিয়ম মূলত হিব্রু ভাষায় লিখিত তবে দানিয়েল এবং ইষ্রা পুস্তক দুটির কিছু অংশ অরামীয় ভাষায় লিখিত হয়ছে । নুতন নিয়ম গ্রীক ভাষায় রচিত হয় । বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই বাইবেল লিখেছেন । খ্রিস্টানগণ বিশ্বাস করেন যে এই বাইবেল রচনা হয়েছিল খ্রিস্টীয় ত্রিত্ববাদের অন্যতম পবিত্র আত্মার সহায়তায় । পৃথিবীর অনেক ভাষায় বাইবেল অনুবাদ হয়েছে ।
বিভিন্ন ধর্মের দৃষ্টিকোণ ইহুদি ধর্ম
আব্রাহামীয় ধর্মের মধ্যে ইহুদি ধর্মের লোকেরা খ্রিস্টধর্মের বাইবেলকে স্বীকার করে না যেমনটা স্বীকার করেন না যীশু নামক ঈশ্বরের কোনো বাণীবাহককে । তবে খ্রিস্টানগণ যেখানে বাইবেলের পুরাতন নিয়ম বলতে ইহুদি ধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলোকে বুঝিয়ে থাকেন সেখানে ইহুদি ধর্মে এজাতীয় কোনো বিভাজন দেখা যায় না বরং খ্রিস্টধর্মমতে পুরাতন নিয়মই ইহুদি ধর্মের ঐশ্বিক ধর্মগ্রন্থ তোরাহ । ইসলাম ধর্মে বাইবেল বলে কোনো ধর্মগ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায় না । উল্লেখ পাওয়া যায় ঈশ্বরের বাণীবাহক ঈসা আঃ এর প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল ইঞ্জিল নামক পূর্ণাঙ্গ ধর্মগ্রন্থ । ইঞ্জিলে বলা হয়েছে যে মানুষের গুনাহ থেকে নাজাত করার জন্য আল্লাহ্‌ তার মনোনিত ব্যক্তি ঈসাকে দুনিয়াতে প্রেরন করেছেন । যে কেউ ঈসার উপর ঈমান আনে এবং গুনাহের মাফ পাবার জন্য তওবা করে আল্লাহুর দিকে ফেরে সেই নাজাত পায় । ইঞ্জিল কিতাবের ইউহোন্না খন্ডের ১৪ রুকু ৬ আয়াতে বলা হয়েছে আমিই ঈসাই পথ সত্য আর জীবন । আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে অর্থাৎ আল্লাহুর কাছে যেতে পারে না । উল্লেখ্য আছে যে ঈসা আঃ আল্লাহু কে পিতা বলে সম্মধন করেছেন । ইসলামী জীবন ধারার ব্যাখ্যামতে এই ঈসা আঃ হলেন খ্রিস্টধর্মমতে যীশু । তাই ধরে নেয়া হয় বাইবেল হলো সেই ইঞ্জিল । কিন্তু ইসলাম পূর্বতন এসব ধর্মগ্রন্থকে স্বীকৃতি দিলেও সেই যাবতীয় নিয়মকানুনকে রহিত করে শেষ বাণীবাহকের আনা ধর্মগ্রন্থ কোরআনকে একমাত্র স্বীকৃত ধর্মগ্রন্থ এবং জীবনবিধান হিসেবে স্বীকার করে ।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment