ছোট গল্পঃপরশ পাথর


কবির তখন ক্লাস নবম শ্রেনীর পড়ুয়া ছাত্র কিন্তু সে একটু বোকা টাইপের । কবিরের পৃথিবীর অনেক কিছু সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞ্যান বুদ্ধি কোন ধারনা নেই । তাই কবিরের বন্ধু শঙ্কু একদিন কবিরকে বললো দোষ্ট আজ কদিন থেকে লক্ষ্য করছি তুমি ক্লাসে কেমন জানি কিছের ভাবনায় ডুবে থাক ।কদিন ধরে ক্লাসেও তেমন কোন মন যোগ দিচ্ছনা বিষয়তা কি বলতো ।কবির তার বন্ধু শঙ্কুকে বললো আর বলিছ না আজ কদিন থেকে আমার মাথায় একটি ভূত ডুকেছে ।

শঙ্কু কবিরকে প্রশ্ন করলো দোস্ত আবার হঠা করে তোমার মাথায় কিছের ভূত ডুকলো । কবির শঙ্কুকে বললো আর বলো না বন্ধু কাল কথায় কথায় আমি বড় আপুকে বললাম আপু আমি অনেক ধনী ব্যক্তি হতে চাই ।সারা পৃথিবীর যত ধনী আছে আমি তাদের থেকেও আর বেশি ধনী হতে চাই ।
এ কথা বলার পরে আপু আমায় বললো কবির তুই কি জানিছ চিলের চোখ ফোটে কি ভাবে আমি বললাম না ।আপু আমায় বললো চিলের যখন বাচ্চা ফোটে তার ঠিক পনেরো দিনের ভেতরে সেই বাচ্চার চোখে পরশ পাথর এনে সেই পাথরের ছোয়া লাগিয়ে দিতে হবে তাহলে চিলের বাচ্চার চোখ পরিপূর্ণ দেখতে পারবে ।

কি বলছো আপু এই পরশ পাথর মানে একটি পাথরের এত গুনাগুন ।হ্যারে ছোট তবে আর বলছি কি অনেক ক্ষমতা এই ছোট একটি পাথরের।চিলের চোখ ফোটানো ছাড়াও এই পাথরটির আর একটি বিশেষ গুণ আছে।কবির তার বড় বোনকে আবার পাল্টা প্রশ্ন করলো সেইটা আবার কোন গুন আপু । কবিরের বড় বোন বললো এই পাথরটি তুমি যে কোন ধাতুর সাথে ছোঁয়া দিলে সংঙ্গে সংঙ্গে সেই ধাতুটি স্বর্ণে পরিণত হয়ে যায় ।

কবির তার বড় বোনকে আবার জিজ্ঞাসা করলো তাহলে আপু এই পরশ পাথর কোথায় পাওয়া যাবে।


কবিরের বড় বোন কবিরকে বল্লো এই পরশ পাথর পাওয়া যায় আমাদের বাংলাদেশেরই বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝ খানে নদীর একেবারে গভীরে।

কি বলছো আপু ওখান থেকে চিল কিভাবে তাহলে ঐ পরশপাথর তুলে আনে । ভাই কবির ওটা চিলের বিষয় কেননা চিল সে জানে ঐ পরশ পাথরটি না হলে তার বাচ্চার চোখ কোন ভাবেই ফোটানো সম্ভব না তাই চিলটির যত কষ্টই হোক না কেন তাকে নদীর মাঝ খান থেকে পরশ পাথরটি আনতেই হবে এবং সে আনে । কবির তার বড় বোনকে বললো কি বলো আপু এটো দেখছি বিশাল অবাক কান্ড এ কথা বলে কবির ঐ রাতে ঘুমিয়ে যায় ।

পরদিন সকালে যখন স্কুলের ক্লাসে কবিরের বন্ধু শঙ্কু কবিরের কাছে বিষয়টি জানতে পারলো তখন শঙ্কু কবিরকে বললো কবির তোমার বড় বোন তোমাকে যে কথাগুলো বলছে তা কিন্তু একে বারে মিছে বলে নাই ।

শঙ্কু কবিরকে আর বললো কবির এ বিষয়টি নিয়ে ভাবনার তেমন কিছুই দেখছি না । শঙ্কু কবির কে আর বললো শোন কবির একজন কবি কিন্তু একটি বা দুটি কবিতা বা গল্প লেখে না ।একজন কবি প্রথমে সে যখন কবিতা বা গল্প লেখে তখন কিন্তু তার কবিতা বা গল্প ভালো হয় না তাই বলে সে কবিতা বা গল্প লেখা বাদ দেয় না ।

কারন একজন কবি তার মনেও ইচ্ছা থাকে পৃথিবীর সব থেকে বড় কবি হবে। আর তার সেই ইচ্ছা পূরনের লক্ষ্যে তাকে হাজারো কবিতা ও গল্প লেখতে হয় । আর তার এ লেখাই তাকে একদিন সত্যি কারের বড় কোন কবি বা বড় কোন লেখক বানায় ।

শুধু তাই নয় কবির মনে কর একজন কন্ঠ শিল্পিকে শতশত গান গায়তে হয় ও শতশত গীতি কাব্য রচনা করতে হয় তবেই সে গীতিকার বা কন্ঠ শিল্পি পরিচিত ও খ্যতাব পায় ।

কবির শঙ্কুকে বললো একি বন্ধু তুমিও আপুর মতো এসব কি বলছো না এ কোন ভাবেই সম্ভব না । শঙ্কু তার বন্ধু কবিরকে প্রশ্ন করলো কি সম্ভব নয় কবির এই যে বুড়িগঙ্গা নদীর গভীর থেকে পরশপাথর এনে চিলের বাচ্চার চোখ ফোটানো ।

শঙ্কু কবিরকে বললো কবির তুই এখন এত বোকা কেনরে । কি বলতে চাছ তুই শঙ্কু আমি বোকা মানে ।
তুই বোকা না তো কি ।

তুই তোর বড় বোনের কাছে ধনী হওয়ার বুদ্ধি চেয়েছিছ তাই তোর বোন তোকে চিলের বাচ্চা ও পরশ পাথর দিয়ে একটি উদাহারন দিয়েছে ।

আর আমি তোকে সেই উদাহরনের কথার অর্থ ভেঙে দিলাম তার পরেও তুই এই প্রশ্ন করিছ । কবির অনেকক্ষন চুপ করে থাকলো পরে কবির বল্লো তার মানে আপু বলেছে আমাকে অনেক পড়া লেখা ও পরিশ্রম করতে হবে ।

শঙ্কু কবিরকে বল্লো হ্যা কবির তোমার বড় বোন তোমাকে এটাই বোঝাতে চেয়েছে ।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment