এ কোন নৈরাজ্যের মধ্যে আমরা বসবাস করছি

11এ কোন নৈরাজ্যের মধ্যে আমরা বসবাস করছি। রাজনৈতিক রোষানলে হাতিয়ায় কয়েকশত বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে রাতের আঁধারে। তবে যারা কাজটি করেছে বা যাদের পক্ষে এই ঘৃণ্য কাজটি হয়েছে,তারা দিনের আলোর সাদা মানুষ। তারা সমাজের রাষ্ট্রের পদাধিকারী বা এ সব পদে যাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হন। ছোট বেলায় পড়েছি, গাছ আমাদের সুশীতল ছায়া দেয়, ফল দেয়, জ্বালানীদেয়ও ঔষধি দেয়। বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃক্ষের উপযোগীতা আরো বাড়ছে। বিশ্বের তাপমাত্রা কমাতে অন্যতম উপাদান হচ্ছে নানা ধরনের বনায়ন। সে বনায়ন সামাজিক হোক আর গভীর অরণ্য হোক সবটুকু আমাদের প্রয়োজনে। হাতিয়ার মত দ্বীপ উপকূলের জন্য এই বনায়ন খুবই জরুরী। সে জন্য বন বিভাগের বাইরে ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সড়ক বনায়ন করেছে।এর বাইরে রয়েছে বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন। জেলার বনায়নের হাতিয়া হচ্ছে অন্যতম উপযোগী স্থান । তাই সেখানে বৃক্ষরাজির সমাহার যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে প্রকৃতির নৈস্ব:র্গিক রূপ। বনায়নের ফলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষাকারি নানাবিধ উভয়চর প্রাণী, পাখীদের বিচরণ বাড়ছে। নিঝুম দ্বীপের মত আরো কিছু ছোট ছোট গভীর অরণ্য বেষ্টিত দ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে। তাতে মানুষের জীবিকায়ন যেমন বেড়েছে, তেমনি আইনশৃঙ্খলা জনিত  পরিস্থিতির মাঝে মধ্যে অবনতি ঘটছে। এর দায়ভার স্থানীয় নেতৃত্ব ও প্রশাসনের। হাতিয়া ছিল জেলার খাদ্য সম্পদ উদ্বৃত উপজেলা। উপজেলার বসবাসকারীরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে ঊনিশ শতক পর্যন্ত এই গর্ব ধারণ করেছে। নদী ভাঙ্গনে এই উপজেলার শিক্ষা সাংস্কৃতি, কৃষি, প্রাণী ও মৎস সম্পদের সাথে নিশ্বে:স হতে চলেছে অনেক ঐতিহ্য। এর অন্যতম হচ্ছে রাজনৈতিক ঐতিহ্য। হাতিয়ার রাজনীতি কতটা নৃশংস হয়েছে এর প্রমান ২৮ সেপ্টেম্বর বৃক্ষ নিধনের মত ঘৃণ্য এবং জঘন্যতম কাজ। সরকারের দায়িত্বশীল মহলের টনক কতটুকু নড়েছে তা অনুমেয় না হলেও সাধারণ মানূষের মনে এর বিরূপ প্রতিকৃয়া হয়েছে। হাতিয়ার প্রবীণ রাজনৈতিক কর্মী, সুশীলসমাজ, বিষয়টিকে ’’প্রকৃতি খুনের’’ মত অপরাধের সাথে তুলনা করেন। বিষয়টি নিয়ে একাধিক সূত্র বলেছে, প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক কর্মসূচী থেকে বিরত রাখতে বৃক্ষনিধন করে প্রতিরোধ করা দায়ীদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বকে নিশ্চিত করে।  যতটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে,সরকারী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচীতে যোগদানের জন্য জেলা নেতৃবৃন্দ হাতিয়ায় গমনে বাধা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও দলের সাবেক সংসদ সদস্য মো.আলীর সমর্থকরা সড়ক অবরোধের জন্য হাতিয়ার দু’প্রান্তে ৫০ কি:মি: জুড়ে সড়ক অবরোধ করে। কেবল নেতাদের নয় জনসভায় আগত কর্মী সমর্থকদের ঠেকাতেও এই আয়োজন হয়। সবচাইতে অবাক লাগে প্রশাসনের নাকের ডগায় রাতে  অন্ততঃ তিনটি স্থানে গরু জবাই করে এই বৃক্ষ নিধন আয়োজকদের ভুরিভোজে আপ্যায়িত করা হয়। সরকারের গোয়েন্দা,পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসনের অনেকেই বিষয়টি জানতেন। আমাদের প্রশাসনে যারা চাকুরি করেন তারা নিজেদের বিজ্ঞ ও সবজান্তা ভাবেন। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে। এই ঘটনায় হাতিয়া প্রশাসনের অজ্ঞতা না উদাসীনতা ছিল তা খতিয়ে দেখার দাবি রাখে (ইতোমধ্যে ওসি ক্লোজড্ হয়েছেন)। স্থানীয় আমজনতার মত হচ্ছে,যদি সংঘর্ষ বা সংকট এড়াতে আগের দিন শুক্রবার বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করা হতো তা,হলে এই বৃক্ষগুলো নিধণ রোধকরা সম্ভব হতো। আমরা সাধারণ মানুষ এই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞের সঠিক তদন্ত ও আইনানুগ বিচার ও দোষীদের শাস্তি দাবী করতেই পারি। জলবায়ু দুর্যোগে বাংলাদেশ এমনিতেই ঝুকিঁর মুখে। সুতরাং; যারা কয়েক শত গাছ কেটে এই প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবের সহায়তা করেছে তারা  খুনীর পর্যায়ে পড়ে, তাদের শাস্তি আমাদের দাবী ও জনতার দাবী।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment