সামনে আছেন জামায়াত পেছনে হাতছে হেফাজত

২৫ অক্টোবর থেকে সরকারবিরোধী চূড়ান্ত আন্দোলনে নামছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। এ সময় কৌশলগত কারণে সামনে রাখা হবে সাংগঠনিকভাবে গোছালো জামায়াতে ইসলামীকে। পেছনে রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে থাকবে অসংগঠিত হেফাজতে ইসলাম। এ লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম ও ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে এখন কঠোর কোনও কর্মসূচি না-দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী ও ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলোর একাধিক উচ্চপর্যায়ের সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রগুলো জানায়, ২৫ অক্টোবরের আগে বড় ধরনের কোনও কর্মসূচিতে যাবে না জামায়াত ও হেফাজত। এ দুটি শক্তিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনে দুইভাবে ব্যবহার করতে চায় বিএনপি। চাওয়া এই যে, জামায়াত-শিবির থাকুক রাজপথে সহিংস, ধর্মের দোহাই দিয়ে মানুষের মগজধোলাইয়ের দায়িত্ব নিক হেফাজত।নামপ্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতের এক শীর্ষ নেতা জানান, বিএনপিনেত্রী জানেন, হেফাজতের কোনও সাংগঠনিক ভিত্তি নেই। এ ছাড়া সম্প্রতি হেফাজতের নেতা মুফতি ইজাহারের মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের কারণে বেকায়দায় আছে সংগঠনটি। তাই খালেদা জিয়ার পরামর্শেই হেফাজত কিংবা ইসলামী কোনও দল ২৫ অক্টোবরের আগে মাঠে সক্রিয় হবে না।
জানা গেছে, জোটগত আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণে ১৮ দলের শরিক ধর্মভিত্তিক দল ও সংগঠনগুলোকে দুই ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। প্রথমত— দলীয়ভাবে কঠোর কর্মসূচি দিয়ে শক্তি ক্ষয় না করে ২৫ অক্টোবর সরকারের সিদ্ধান্ত দেখে সভা-সেমিনার ও বিবৃতিমূলক রাজনৈতিক তত্পরতা অব্যাহত রাখা; দ্বিতীয়ত— সরকার একপক্ষীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে সর্বশক্তি দিয়ে তা প্রতিহত করা; তৃতীয়ত— ৫ সিটি নির্বাচনের মতোই মানুষকে বোঝানো যে, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসলে ইসলাম বিপন্ন হবে। জানা গেছে, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক ৩টি দল খেলাফত মজলিস, ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ১৮ দলীয় জোটভুক্ত। দলগুলোর শীর্ষনেতারা গত দুই  মাসে একাধিকবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে খালেদা জিয়া তাদের ২৪ অক্টোবর-পরবর্তী রাজনৈতিক তত্পরতা নিয়ে নির্দেশনা দেন। খালেদা জিয়ার নির্দেশনা সামনে রেখেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে ১৮ দলীয় জোটভুক্ত ধর্মভিত্তিক ইসলামী দলগুলো। এ ব্যাপারে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী আমাদের সময়কে বলেন, এখনও আন্দোলনের ‘ফোর্স অব অ্যাকশন’ নির্ধারণ হয়নি। সময় আসুক। নেতারা বসে সিদ্ধান্ত নিলে জানা যাবে। তবে সরকার একতরফা নির্বাচনের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান এ ব্যাপারে বলেন, আগামী ২৪ অক্টোবরের পর দেশের জনগণ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাসহ ১৮ দলের নেতা-কর্মী ও আলেমদের মুক্তি চাইবে। বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাইব্যুনাল বাতিল করে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে গণআন্দোলন শুরু করবে।
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment