জোট-মহাজোটের বাইরে তৃতীয় একটি জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দেশের আরেক সাবেক রাষ্ট্রপতি বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী থাকছেন তার সঙ্গে। এ ছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) প্রধান আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর এই জোটে থাকার কথা রয়েছে।
এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়াতুল মোদারেসিনসহ ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন শরিক হচ্ছে এ জোটে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের দাবি, তার এই জোটে বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনও থাকবেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ নিজেই বলেছেন, শিগগিরই তার নেতৃত্বে এই নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এর আগেই তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বাইরে বৃহৎ শক্তি হিসেবে রাজনীতির মাঠে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্য নিয়েই এ জোট গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা। তবে ভিন্ন মতও আছে। এ অংশের মতে, এরশাদ এবং বি. চৌধুরী একসঙ্গে নয়, তাদের দু’জনের নেতৃত্বে আলদা দুটি জোট হচ্ছে। আরও আলাপ-আলোচনার পর ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে এক প্লাটফর্মে আসবেন দুই সাবেক রাষ্ট্রপতি।
এরকম ভাবনা নিয়েই বুধবার রাতে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বারিধারার বাসায় বৈঠক করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ, বি. চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব ও কাদের সিদ্দিকী। এই বৈঠকে গণফোরামের একজন শীর্ষ নেতাও উপস্থিত ছিলেন। বি. চৌধুরীর একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগে চার শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব, আগামী নির্বাচনসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ যে কোনো সময় মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসা এবং নতুন জোট গঠনের উদ্যোগের কথা জানান।
বি. চৌধুরীর বাসায় বৈঠকের পর দিন বৃহস্পতিবার বনানীতে জাতীয় ছাত্রসমাজের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি দু-একদিনের মধ্যে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়ে এ সময় বলেন, অচিরেই নতুন জোট ঘোষণা করা হবে। এ জোটে ছোটখাটো সব দল আসবে। এরশাদ আরও বলেন, অনেক দলের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। শিগগির তাদের সমন্বয়ে নতুন জোট ঘোষণা করব। তিনি বলেন, সুযোগ এসছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। জনগণই ঠিক করবে আগামীতে কে ক্ষমতায় আসবে।
তবে বি. চৌধুরীর বাসায় এরশাদের সঙ্গে বৈঠক হলেও তার জোটে থাকছেন না বলে জানিয়েছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে তিনি বলেন, এরশাদ কী করছেন তা তার বিষয়। আমরা তার সঙ্গে জোটে নেই। আ স ম আবদুর রব বলেন, তারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেরাই নতুন একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। অচিরেই এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে জানান তিনি। কারা থাকছে তাদের সঙ্গে- এমন প্রশ্নের জবাবে আ স ম আবদুর রব বলেন, সময়ই বলে দেবে কারা তার সঙ্গে থাকছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেএসডির এক নেতা যুগান্তরকে জানান, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য থাকছে জেএসডির সঙ্গে।
এরশাদের সঙ্গে জোটে যাওয়া নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। তিনি বলেন, বিষয়টি ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, তারা পৃথক একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরেই অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে গতকাল ছাত্রসমাজের অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, বড় দুই দল এখন জাতির জন্য অভিশাপ। জাতি এ দুই দলের রাহুর গ্রাস থেকে মুক্তি চায়। এই দুই দলের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বারবার সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে এরা। গণতন্ত্রকে নর্দমায় ফেলে দেয়া হয়েছে। এই অশুভ চক্র ভেঙে জাপা ক্ষমতায় আসবেই। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দু-একদিনের মধ্যেই আমি মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেব। এরশাদ বলেন, আমি নাকি স্বৈরাচার ছিলাম। এখন যারা আছে তারা মহাস্বৈরাচার। তাদের যদি সাহস থাকে তাহলে নির্বাচন দেবে। কিন্তু তাদের সে সাহস নেই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একটা লাশের দরকার ছিল, তাই নুর হোসেন নামের লাশ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখন পুলিশের গুলিতে অগণিত লাশ পড়ছে, কোনো খবর নেই। তিনি বলেন, তখন গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু গণতন্ত্রের বদলে পেয়েছি দুর্নীতি। মানুষ হয় ফুটবল-ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন, আমরা হয়েছি দুর্নীতিতে। তাও পাঁচবার।
এরশাদ বলেন, একদল তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, অন্যদল বলে তত্ত্বাবধায়ক দেব না। তাদের ক্ষমতায় যাওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য। তারা কেউ জনগণের কথা ভাবে না। এখন সুযোগ এসেছে, এ সুযোগকে আমরা কাজে লাগাব। জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিবেচিত হবে না। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে যাব না। অশুভ চক্র ভেঙে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে জয়লাভ করবে। দুই জোটের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ১৮ দলীয় জোটে কত দল আছে, তারা নিজেরাই জানে না। ১৪ দলে কতগুলো দল আছে, তা তারাও জানে না। এবার আমরা জোট করব এবং এই জোট জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে।
এরশাদ বলেন, তার শাসনামলে দেলোয়ার হোসেন নামের একজন গাড়িচাপায় নিহত হয়েছিলেন। নূর হোসেন পেছন থেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পুলিশ গুলি করলে তো সামনে থেকে গুলি করত। তিনি বলেন, আমি দেলোয়ার হোসেনের বাসায় গিয়েছিলাম। নূর হোসেনের বাবাকে প্রতি মাসে টাকা দিতাম। এখন কত লোকের প্রাণহানি ঘটছে, কত মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে, কোনো নেতা-নেত্রীকে দেখেছেন তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে?
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রখেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, এসএম ফয়সল চিশতী ও জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিজানুর রহমান হিমু।
কাদের সিদ্দিকীর অনুষ্ঠানে এরশাদ যাচ্ছেন না : কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক মহাসমাবেশ করবে এবং এ সমাবেশে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ থাকবেন বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অস্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপস্থিত থাকবেন বলে যে খবর প্রচার করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। যেহেতু জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের জোট হয়নি, সেহেতু ওই সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
- See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2013/11/15/41843#sthash.7Dj6kl8z.dpuf

জোট-মহাজোটের বাইরে তৃতীয় একটি জোট গড়ার উদ্যোগ নিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দেশের আরেক সাবেক রাষ্ট্রপতি বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী থাকছেন তার সঙ্গে। এ ছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) প্রধান আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রধান বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর এই জোটে থাকার কথা রয়েছে।
এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়াতুল মোদারেসিনসহ ইসলামপন্থী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন শরিক হচ্ছে এ জোটে। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের দাবি, তার এই জোটে বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনও থাকবেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ নিজেই বলেছেন, শিগগিরই তার নেতৃত্বে এই নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। এর আগেই তিনি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের বাইরে বৃহৎ শক্তি হিসেবে রাজনীতির মাঠে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্য নিয়েই এ জোট গঠন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এর সঙ্গে সম্পৃক্তরা। তবে ভিন্ন মতও আছে। এ অংশের মতে, এরশাদ এবং বি. চৌধুরী একসঙ্গে নয়, তাদের দু’জনের নেতৃত্বে আলদা দুটি জোট হচ্ছে। আরও আলাপ-আলোচনার পর ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে এক প্লাটফর্মে আসবেন দুই সাবেক রাষ্ট্রপতি।
এরকম ভাবনা নিয়েই বুধবার রাতে অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বারিধারার বাসায় বৈঠক করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ, বি. চৌধুরী, আ স ম আবদুর রব ও কাদের সিদ্দিকী। এই বৈঠকে গণফোরামের একজন শীর্ষ নেতাও উপস্থিত ছিলেন। বি. চৌধুরীর একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার সুযোগে চার শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সর্বদলীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব, আগামী নির্বাচনসহ দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ যে কোনো সময় মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসা এবং নতুন জোট গঠনের উদ্যোগের কথা জানান।
বি. চৌধুরীর বাসায় বৈঠকের পর দিন বৃহস্পতিবার বনানীতে জাতীয় ছাত্রসমাজের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বিষয়টি আরও পরিষ্কার করেন। তিনি দু-একদিনের মধ্যে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়ে এ সময় বলেন, অচিরেই নতুন জোট ঘোষণা করা হবে। এ জোটে ছোটখাটো সব দল আসবে। এরশাদ আরও বলেন, অনেক দলের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে। শিগগির তাদের সমন্বয়ে নতুন জোট ঘোষণা করব। তিনি বলেন, সুযোগ এসছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। জনগণই ঠিক করবে আগামীতে কে ক্ষমতায় আসবে।
তবে বি. চৌধুরীর বাসায় এরশাদের সঙ্গে বৈঠক হলেও তার জোটে থাকছেন না বলে জানিয়েছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব। বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে তিনি বলেন, এরশাদ কী করছেন তা তার বিষয়। আমরা তার সঙ্গে জোটে নেই। আ স ম আবদুর রব বলেন, তারা বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিজেরাই নতুন একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। অচিরেই এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে জানান তিনি। কারা থাকছে তাদের সঙ্গে- এমন প্রশ্নের জবাবে আ স ম আবদুর রব বলেন, সময়ই বলে দেবে কারা তার সঙ্গে থাকছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেএসডির এক নেতা যুগান্তরকে জানান, কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য থাকছে জেএসডির সঙ্গে।
এরশাদের সঙ্গে জোটে যাওয়া নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। তিনি বলেন, বিষয়টি ভিত্তিহীন। এ বিষয়ে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান বলেন, তারা পৃথক একটি জোট গঠনের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরেই অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে গতকাল ছাত্রসমাজের অনুষ্ঠানে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ বলেন, বড় দুই দল এখন জাতির জন্য অভিশাপ। জাতি এ দুই দলের রাহুর গ্রাস থেকে মুক্তি চায়। এই দুই দলের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বারবার সংবিধান সংশোধন করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে এরা। গণতন্ত্রকে নর্দমায় ফেলে দেয়া হয়েছে। এই অশুভ চক্র ভেঙে জাপা ক্ষমতায় আসবেই। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দু-একদিনের মধ্যেই আমি মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেব। এরশাদ বলেন, আমি নাকি স্বৈরাচার ছিলাম। এখন যারা আছে তারা মহাস্বৈরাচার। তাদের যদি সাহস থাকে তাহলে নির্বাচন দেবে। কিন্তু তাদের সে সাহস নেই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একটা লাশের দরকার ছিল, তাই নুর হোসেন নামের লাশ তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু এখন পুলিশের গুলিতে অগণিত লাশ পড়ছে, কোনো খবর নেই। তিনি বলেন, তখন গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু গণতন্ত্রের বদলে পেয়েছি দুর্নীতি। মানুষ হয় ফুটবল-ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন, আমরা হয়েছি দুর্নীতিতে। তাও পাঁচবার।
এরশাদ বলেন, একদল তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়, অন্যদল বলে তত্ত্বাবধায়ক দেব না। তাদের ক্ষমতায় যাওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য। তারা কেউ জনগণের কথা ভাবে না। এখন সুযোগ এসেছে, এ সুযোগকে আমরা কাজে লাগাব। জাতীয় পার্টি আর কোনো দলের ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে বিবেচিত হবে না। সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে যাব না। অশুভ চক্র ভেঙে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে জয়লাভ করবে। দুই জোটের সমালোচনা করে এরশাদ বলেন, ১৮ দলীয় জোটে কত দল আছে, তারা নিজেরাই জানে না। ১৪ দলে কতগুলো দল আছে, তা তারাও জানে না। এবার আমরা জোট করব এবং এই জোট জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে।
এরশাদ বলেন, তার শাসনামলে দেলোয়ার হোসেন নামের একজন গাড়িচাপায় নিহত হয়েছিলেন। নূর হোসেন পেছন থেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পুলিশ গুলি করলে তো সামনে থেকে গুলি করত। তিনি বলেন, আমি দেলোয়ার হোসেনের বাসায় গিয়েছিলাম। নূর হোসেনের বাবাকে প্রতি মাসে টাকা দিতাম। এখন কত লোকের প্রাণহানি ঘটছে, কত মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যাচ্ছে, কোনো নেতা-নেত্রীকে দেখেছেন তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে?
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রখেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, এসএম ফয়সল চিশতী ও জাতীয় ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিজানুর রহমান হিমু।
কাদের সিদ্দিকীর অনুষ্ঠানে এরশাদ যাচ্ছেন না : কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক মহাসমাবেশ করবে এবং এ সমাবেশে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ থাকবেন বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অস্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপস্থিত থাকবেন বলে যে খবর প্রচার করা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। যেহেতু জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের জোট হয়নি, সেহেতু ওই সমাবেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
- See more at: http://www.jugantor.com/first-page/2013/11/15/41843#sthash.7Dj6kl8z.dpuf
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment