পাবনায় এবারও কোরবানির হাটে পশুর দাম পড়ে গেছে।




পাবনায় এবারও কোরবানির হাটে পশুর দাম পড়ে গেছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পাবনা জেলার বিভিন্ন হাটে গরুর প্রচুর গরু আমদানি হচ্ছে। দামও গত বছরের তুলনায় অন্তত ২০ শতাংশ কম।তবে আমদানির তুলনায় ক্রেতা কম হওয়ায় বেপারিরা গরু বিক্রি করতে পারছেন না। এদিকে গরুর দাম কমে যাওয়ায় বৃহত্তর পাবনা (পাবনা-সিরাজগঞ্জ) জেলার কয়েকশগোখামারি মৌসুমী গরু ব্যবসায়ী লোকসানের মুখে পড়েছেন। বেপারিরা জানান, বৈধ অবৈধ পথে ভারতীয় গরুর অবাধ আমদানিতে গো-খামারি গরু ব্যবসায়ীদের ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়তে হবে। গত বছরও ঈদের হাটে ভারতীয় গরু আমদানি এবং হাটে দাম পড়ে যাওয়ায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে ব্যবসায়ীরা।জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পাবনা সিরাজগঞ্জ জেলার ১২ সহস াধিক গো-খামারি ৩৫ হাজার গরু পালনকারী শহরের হাজীর হাট, টেবুনিয়ার হাট, আতাইকুলা হাট, পুস্পাড়ার হাট, অরণকোলা হাট, কাশীনাথপুর হাট, করমজা চতুরহাট, শরতনগর হাটসহ অন্তত ১৫টি হাট থেকে গরু ছাগল কিনে বেপারীদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় লক্ষাধিক গরু সরবরাহ করে থাকেন। প্রতি বছর ঈদের আগে গরু ব্যবসায়ীরা খামারিদের বাড়ি থেকে গরু কিনে নিয়ে যান। কিন্তু বছর পাইকাররা খামারীদের বাড়ি থেকে গরু কিনছেন না।
হাটে প্রচুর দেশি গরু-ছাগল আমদানি হচ্ছে। আমদানির তুলনায় গরুর পাইকার কম। স্থানীয় ক্রেতাদের ছোট গরু কেনার প্রতি ঝোঁক বেশি। অস্ট্রেলিয়ান জাতের বড় গরুর চাহিদা
বিক্রি হচ্ছে খুবই কম। ফলে অঞ্চলের গো-খামারি পালনকারীরা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে জানা গেছে। পাবনার নগরবাড়ি-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন বেড়া সিঅ্যান্ডবি বাসস্ট্যান্ডের পাশে ইছামতী নদীর পাড়ে বেড়া চতুর বাজারের পশ্চিম পাশে গড়ে উঠেছে পাবনার বড় গরুর হাট। তারপরেই সদরের হাজীরহাট, পুষ্পপাড়ার হাট দাশুরিয়ার অরণকোলার হাট রয়েছে। তার মধ্যে চতুরবাজারে সড়ক নৌ-পথে যোগাযোগের সুন্দর ব্যবস্থা থাকার জন্য গরু পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছে দিন দিন হাটটির গুরুত্ব বেড়েছে।শুধু এলাকার গরু ব্যবসায়ীরাই নয়, পাবনা জেলার বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ী গরু বিক্রির জন্য এই হাটে নিয়ে থাকেন। আবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চলের জেলার গরু ব্যবসায়ীরা চতুরহাট বা হাজীরহাট নয়তো পুষ্পপাড়ার হাট থেকে নিজেদের পছন্দের গরু খরিদ করেন বিক্রির জন্য। চতুরহাটে সপ্তাহের শনিবার মঙ্গলবার দুই দিন গরুর হাট বসে। আর হাজীর হাটে শুক্রবার মঙ্গলবার হাট বসে।এসব হাটে কোরবানি ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে
প্রতি দিন গরুর হাট বসবে বলে হাট কমিটি সূত্র জানিয়েছে।
বেড়া সিঅ্যান্ডবি চতুরহাট সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, গরুর হাটে দূর-দুরান্ত থেকে গরু ব্যবসায়ী খামারীরা ট্রাক, নসিমন, করিমন নৌকায় করে হাজার হাজার গরু নিয়ে আসছেন। হাটের মধ্যে জায়গা না হওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর পশুর হাট বসেছে। ছোট, বড় মাঝারি সব ধরনের গরু আমদানি হয়েছে। বড় মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা কম। তবে ছোট গরুর চাহিদা বেশি রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।গরুর দাম কমার কারণ হিসেবে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, কৃষিজপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্থবিরতা এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর হাতে টাকা না থাকাকে ব্যবসায়ীরা দায়ী করেছেন। এদিকে উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী এবং খামারীরা হাট থেকে গরু ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার বড়ধনগাছা গ্রামের এক খামারী জানান, বেড়া চতুরহাটে তার অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরুর দাম উঠেছে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা, বিক্রি না করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ গত বছর ধরনের একটি গরুর দাম ছিল কমপক্ষে দুই লাখ টাকা।
বেড়ার জোড়দহ গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক জানান, তিনি হাটে গরু এনে বিপাকে পড়েছেন। আমদানির তুলনায় গরুর ক্রেতা কম। ক্রেতারা তার গরুর দাম ৪৫ হাজার টাকা বলছে। দামে গরু বিক্রি করলে লোকসান দিতে হবে। গত বছরের অবিক্রীত গরু এবার ঈদ উপলক্ষে হাটে বিক্রি করতে এনে সঠিক দাম পাচ্ছেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।পয়লারচরের গরু ব্যবসায়ী আহাদ আলী প্রামানিকের মতে ভারত থেকে চোরাপথে গরু আমদানি হচ্ছে। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ১৪টি ভারতীয় গরু ট্রাকে করে বেড়া চতুরহাটবিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে ৮টি গরু নিজে ভারত থেকে এবং ৬টি গরু স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে কিনেছেন
Share on Google Plus

About juwel ishlam

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment