এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে পাল্টা যুক্তিতর্ক শেষে ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখেন। একই সঙ্গে আলীমের জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার আলীমের পক্ষের আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে করেন।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের আদেশের পর প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম আলীমের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে বলেন, ‘আমরা আসামি আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে আনা ১৭টি অভিযোগের মধ্যে ১৫টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।এজন্য আলীমের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।’ তিনি বলেন, ‘বয়স নয়, অপরাধের গভীরতাই মামলার মূল বিষয়। আলীমের বয়স ৮৩ বছর হলেও একাত্তরে যখন অপরাধ করেন তখন তার বয়স ছিল ৪১ বছর।’
অবশ্য আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আলীম জয়পুরহাটের একজন জনপ্রিয় নেতা। প্রসিকিউশন তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তা বিস্ময়কর। আলীমের বিরুদ্ধে আনা কোনো অভিযোগের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। তিনি খালাস পাবেন বলে আমরা আশা করছি।’২০১২ সালের ১১ জুন আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর টানা এক বছর তিন মাস শেষে মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। এর আগে গত ৪ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার কার্যদিবসে প্রসিকিউশন প্রথম পর্যায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।আলীমের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রসিকিউশনের ৩৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এছাড়া তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়া দু’জনের জবানবন্দি সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এদিকে আলীমের পক্ষে তিনজন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর আগে গত বছরের ২৩ মে আলীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার জন্য ট্রাইব্যুনাল আদেশের দিন ধার্য করেন। ওইদিন একই সঙ্গে তার জামিনের মেয়াদ ১১ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ আবদুল আলীমের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) রেজিস্ট্রারের কাছে দাখিল করেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। গত ২৭ মার্চ তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিশেষ শর্তে জামিনে থাকা আলীমের বিরুদ্ধে তিন হাজার ৯০৯ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এতে সাত ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ২৮টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয় ট্রাইব্যুনালে। পরে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনীত মোট ২৮টি ঘটনার ১৭টি আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করেন।মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১১ সালের ২৭ মার্চ জয়পুরহাটের নিজ বাড়ি থেকে আলীমকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মার্চ তাকে এক লাখ টাকায় মুচলেকা এবং ছেলে ফয়সাল আলীম ও আইনজীবী তাজুল ইসলামের জিম্মায় জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। পরে শুনানিতে পর্যায়ক্রমে কয়েক দফা এই জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন